- Get link
- X
- Other Apps
Featured Post
- Get link
- X
- Other Apps
ঘর বা বাড়ি হল প্রতিটি মানুষের কাছে স্বস্তির একটা জায়গা। ঘর পরিপাটিভাবে সাজানো থাকলে দেখতে যেমন সুন্দর লাগে তেমনি মনে আসে শান্তি। পরিপাটি ঘর একদিকে যেমন চোখ জুড়িয়ে দেয় অন্যদিকে মনকে করে ফুরফুরে । সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে বাড়ি ফিরে সুন্দর সাজানো পরিপাটি ঘর দেখলে মন এমনিতেই চাঙ্গা হয়ে ওঠে। ঘর সাজাতে অনেকে খুব পছন্দ করেন। অনেকের কাছে আবার ঘর সাজানো একটা শখের মত। চলুন জেনে নেয়া যাক ঘর সাজানোর টুকিটাকি বিভিন্ন টিপস।
ঘর সাজানোর টুকিটাকি টিপস | উপকরন
ঘর সাজানোর টিপস:
সঠিকভাবে ঘর সাজানো একটা শিল্প যা একটা মানুষের রুচির পরিচয় প্রকাশ করে। সাজানো গুছানো একটা কুঁড়ে ঘরও অনেক সৌন্দর্যমন্ডিত হতে পারে যদি সঠিক নিয়মে ঘরটি সাজানো হয়ে থাকে। ঘর সাজানোর জন্য দামি জিনিসপত্র ব্যবহার না করলে নাকি সাজানো যায় না- এই ধরনের ধারণা কম বেশি আমাদের সবার মধ্যে দেখা যায়। কিন্তু এটি সম্পূর্ণই একটি ভুল ধারণা। ঘর সাজাতে কম খরচের অনেক জিনিসই বর্তমানে বিভিন্ন শপে পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো একদিকে যেমন সাশ্রয়ী অন্যদিকে দেখতেও অনেক আকর্ষণীয়। এই ধরনের জিনিসগুলো আপনার ঘরে এক ধরনের নান্দনিকপূর্ণ পরিবেশ তৈরী করে। অনেকে আবার প্রয়োজনের অতিরিক্ত আসবাবপত্র কিনে ঘর ভরিয়ে ফেলেন যা ঘরের সৌন্দর্য অনেকাংশে কমিয়ে ফেলে। তাই অতিরিক্ত আসবাবপত্র কেনা পরিহার করতে হবে। এক্ষেত্রে পুরোনো আসবাবপত্রকেই একটু ভিন্নভাবে সাজিয়ে, গুছিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। পুরোনো আসবাবের অবস্থানের পরিবর্তন করে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে ঘর সাজিয়েও ঘরে আনা যেতে পারে বৈচিত্র্য।
বসার ঘর:
লিভিং রুম বা বসার ঘর সবসময় পরিপাটি করে সাজানো উচিত। যেহেতু মেহমান এলে এই রুমেই তাদের আনাগোনা বেশি। বসার ঘরে বেশি জিনিস রাখা যাবে না। একটু স্পেস থাকলে দেখতে ভালো লাগবে। হালকা ধাঁচের আসবাব ব্যবহার বেশি ভালো। সোফা, টি-টেবিল রাখা যেতে পারে। বর্তমানে খুব সুন্দর হালকা ডিজাইনের ফ্যাশনেবল আসবাবপত্র দেখা যাচ্ছে। এই ধরনের সোফা সেট, টি-টেবিল নির্বাচন করা যেতে পারে যা আপনার বসার ঘরে এনে দিতে পারে পারফেক্ট লুক। সোফার সাথে রাখা যেতে পারে সুন্দর আকর্ষণীয় কুশন যা সোফার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও খানিকটা বৈচিত্র্য আনার জন্য বিভিন্ন ধরনের শো-পিচ, বাঁধাই করা ছবিও রাখা যেতে পারে।
শোবার ঘর:
শোবার ঘরের ঠিক মাঝামাঝিতে বেড রাখতে হবে। বেডের দুই পাশে বিভিন্ন ছোটখাট জিনিস রাখা যেতে পারে। একপাশে ছোট একটা টেবিল রেখে তার ওপর ছোট একটা ল্যাম্প বেড রুমে এনে দিতে পারে অন্যরকম শোভা। এছাড়াও বসার জন্য ছোট একটি বা দুটি সোফা রাখা যেতে পারে। ঘরের এক কর্নারে প্রয়োজনীয় জিনিস রাখার জন্য আলমারি রাখা যেতে পারে। সাজগোজের জন্য ড্রেসিং টেবিলও রাখা যেতে পারে। তবে এই সকল আসবাবপত্র ঘরের সাথে মিলিয়ে নির্বাচন করতে হবে নতুবা ঘরের সৌন্দর্য হারিয়ে যাবে।
রান্নাঘর:
রান্নাঘর স্পেস বুঝে নিজের সুবিধামত সাজাতে হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখার জন্য রান্নাঘরের তাকগুলো ব্যবহার করতে হবে। সবজি, পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি ছড়িয়ে ছিটিয়ে না রেখে এগুলো রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের র্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে। ফলে রান্নাঘরের সৌন্দর্য একদিকে যেমন নষ্ট হবে না তেমনি এগুলো প্রয়োজনের সময় খুজে পেতেও সহজ হবে। রান্নাঘরে যেহেতু খাবার তৈরী করা হয় তাই অন্যান্য ঘরের তুলনায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বেশি বজায় রাখতে হবে।
বাথরুম:
বাথরুমকে আকর্ষণীয় করতে নতুন ফ্যাশনেবল ডিজাইনের বড় আয়না ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া ছোট ছোট জিনিস সাজিয়ে রাখার জন্য দেয়ালে তাকওে ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বর্তমানে অনেক আকর্ষণীয় ডিজাইনের তাক রয়েছে। বিভিন্ন সোসাল সাইট থেকেও বিভিন্ন ডিজাইনের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। বাথরুমের সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রাখতে ফ্লোর, টাইলস অবশ্যই সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে।
আসবাবপত্র:
ঘরের জন্য আসবাবপত্র নির্বাচনের সময় একটু ভেবেচিন্তে নির্বাচন করতে হবে। আকর্ষণীয়, টেকসই এবং হালকা ফ্যাশনেবল ডিজাইনের আসবাবপত্র নির্বাচন করা ভালো। অহেতুক আসবাবপত্র কেনা পরিহার করা উচিত। এতে করে একদিকে যেমন ঘরের সৌন্দর্য নষ্ট হবে অপরদিকে ঘরের জায়গাও সংকীর্ণ হয়ে আসবে। এছাড়া ঘরের একঘেয়েমিভাব কাটানোর জন্য মাঝেমধ্যে ঘরের পুরাতন আসবাবপত্রের অবস্থান পরিবর্তন করে নতুন করে সাজানো যেতে পারে।
ঘর সাজানোর উপকরন:
মাটির জিনিস:
ঘর সাজাতে মাটির জিনিসের জুড়ি নেই। মাটির জিনিস বা মৃৎশিল্প আমাদের দেশীয় ঐতিহ্যেও প্রতীক। মাটির জিনিস আপনার ঘরকে করে তুলবে বৈচিত্র্যময় এবং সেই সাথে ঘরে এনে দেবে দেশীয় আমেজ। মাটির বিভিন্ন পাত্র, সরা, পুতুল, করুকাজমন্ডিত ফুলদানি ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘর সাজানোর টুকিটাকি কিন্তু রুচিশীল উপকরণে খুব কম খরচে সহজেই মনের মতো করে ঘরকে সাজিয়ে তোলা যায়।
গাছ:
গাছ যেমন একইসাথে পরিবেশের উপকার সাধন করে তেমনি ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। বিভিন্ন ধরনের পাতাবহার বা লতাগুল্ম জাতীয় ছোট উদ্ভিদ ব্যবহার করা যেতে পারে। বারান্দায় এমনকি বসার ঘরেও গাছ দিয়ে সাজালে ঘরের শোভাবর্ধন করে।
শো-পিচ:
বর্তমানে বাজারে খুব মনোরম এবং সুন্দর থিম এর শো-পিচ পাওয়া যাচ্ছে। ঘর সাজাতে এধরনের শো-পিচ এর ব্যবহার ঘরে এনে দেবে নতুনত্ব।
বই:
আপনি যদি একজন বই প্রেমী হয়ে থাকেন তবে আপনার কালেকশনে রাখা বই দিয়েও খুব সুন্দর করে সাজিয়ে নিতে পারেন আপনার ঘর। এতে করে আপনার ঘরের সৌন্দর্য বেড়ে যাবে ভিন্ন এক আঙ্গিকে। সুন্দর ডিজাইনের সেল্ফ বানিয়ে সাজিয়ে ফেলুন আপনার প্রিয় বইগুলিকে।
ঘর সাজানোর ডিজাইন:
ফ্লোরে বৈচিত্র্যতা:
ফ্লোরে বিভিন্ন আকর্ষণীয় ডিজাইনের ম্যাট, শতরঞ্চি ব্যবহার করুন। এতে করে আপনার রেগুলার ফ্লোরে আসবে ভিন্নতা। এছাড়াও ফ্লোর সাজাতে শীতলপাটিও ব্যবহার করা যেতে পারে। গরমে শীতলপাটির ব্যবহার বেশ আরামদায়ক।
জানালার পর্দায় আনুন ভিন্নতা:
জানালার পর্দায় একটু ভিন্ন ধাঁচের থিম ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে আপনার ঘরে আসবে নতুনত্ব। এছাড়া পর্দায় বিভিন্ন ধরনের ছোট এক্সেসরিজ যেমন: এক্সট্রা ড্রেপ,কারটেইন হোল্ডার ইত্যাদি ব্যবহার করুন। এতে করে আপনার পর্দায় আসবে ভিন্নতা।
পুরোনো ছবি বাঁধাই করুন:
আপনার এ্যালবামে রাখা পুরোনো স্মৃতি গুলোকে আবার নতুন করে সাজান। ছবিগুলোকে সুন্দর ফ্রেমে বাঁধিয়ে পছন্দমত সাজিয়ে ফেলুন আপনার দেয়ালে। ঘরে নিয়ে আসুন নতুনত্বের ছোঁয়া।
লাইটিং:
ঘরের সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে লাইটিং খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। লাইটিং পর্যাপ্ত না থাকলে যতই সাজানো হোক না কেন দেখতে তেমন ভালো দেখায় না। লাইটিং এর জন্য বড়, ছোট ঝার বাতি ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও ছোট, বড় বিভিন্ন রঙের, সাইজের সুন্দর বাতি ঘরের বিভিন্ন কোণায় ব্যবহার করা যেতে পারে যা ঘরের সৌন্দর্যকে বাড়াতে সাহায্য করে।
ঘর সাজানোর টুকিটাকি জিনিস কোথায় পাওয়া যায়:
ঘর সাজানোর টুকিটাকি জিনিস এখন বাজারে অনেক কম মূল্যেই পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি অনেক দোকান এসব জিনিস পাইকারী দামেও বিক্রি করছে। নিউমার্কেট, এলিফেন্ট রোডে আকর্ষণীয় ডিজাইনের শতরঞ্চি, রাগ, কার্পেট অনেক কম মূল্যেই পেয়ে যাবেন। ১৮০০ থেকে ৪০০০ এর মধ্যেই অনেক ভালোমানের জিনিস পাওয়া যায় এ সকল দোকানে। চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, চক বাজার এলাকায় অনেক কম মূল্যে নানা রকম মনোরম শো-পিচ, ঘড়ি, ঝার বাতি, বিভিন্ন ধরনের ল্যাম্প,আর্টিফিশিয়াল ফুলের দোকান রয়েছে। এখানকার দোকান গুলোতে অনেক কম মূল্যে এসব জিনিস পাওয়া যায়। এমনকি কিছু কিছু দোকান পাইকারী দামেও এসব জিনিস বিক্রি করে থাকে।
ঘর হল মানুষের কাছে পরম শান্তির নীড়। আর এই পরম শান্তির নীড়কে পরম সৌন্দর্যে কে না সাজাতে চায়! সাজানো গোছানো পরিপাটি ঘর দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি মনেও আনে এক ফুরফুরে অনুভূতি। কিন্তু ঘরকে পরিপাটি করে সাজাতে যে দামী জিনিসই লাগবে এমন কোনো মানে নেই। কম খরচেও সঠিক জিনিস বাছাই করে ঘর সাজানো সম্ভব। তাই আর দেরি না করে ঝটপট মনের মতো সাজিয়ে ফেলুন আপনার অতি যত্নের বাড়ি।
Related Posts
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment
Please don't enter any spam link in the comment box