Featured Post

স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের ১০টি টিপস

 

স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের  ১০টি টিপস
Image by Dimitris Vetsikas from Pixabay


স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের ১০টি টিপস


একটি স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে, মানসিক চাপ কমাতে এবং জীবনের সুখ- আনন্দ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে । গবেষণায় দেখা যায় যে, স্বাস্থ্যকর সম্পর্কযুক্ত লোকেরা অনেক বেশি সুখী হয় এবং তাদের মানসিক চাপ কম থাকে । প্রতিটি সম্পর্ক ভিন্ন হলেও সম্পর্ককে স্বাস্থ্যকর করার কিছু প্রাথমিক উপায় রয়েছে। স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের জন্য এই ১০টি টিপস আমাদের জীবনের সব ধরণের সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য: বন্ধুত্ব, চাকরি এবং পারিবারিক সম্পর্ক এবং রোমান্টিক সম্পর্ক

১. বাস্তববাদী হতে শিখুন, প্রত্যাশা বাস্তববাদী রাখুন। আমরা কাউকে ঠিক যেমন করে চাই কেউই সম্পূর্ণ এমন হতে পারবে না । একটি স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক মানে একজন মানুষ যেমন তাকে তেমন ভাবে গ্রহণ করা; পরিবর্তনের চেষ্টা না করা।

২. একে অপরের সাথে কথা বলুন। স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের জন্য কথোপকথন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।মনের সুখ- দুঃখের কথা, হাজারো সমস্যার কথা, ভবিষৎ পরিকল্পনা, আপনার স্বপ্ন,চিন্তা সবকিছু সঙ্গীকে খুলে বলুন । 

  • সময় নিন। প্রত্যেকটি সম্পর্ক গড়তে যথেষ্ট পরিমাণ সময় দিতে হয় । 
  • অপরজনের কথা মন দিয়ে শুনুন। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পুরোপুরি বোঝার চেষ্টা করুন।
  • প্রশ্ন করুন। তাদের সম্পর্কে জানতে আপনি আগ্রহী এটা বুঝান। তাদের অভিজ্ঞতা, অনুভূতি, মতামত এবং আগ্রহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন।

৩. নমনীয় হোন। জীবনের নতুন পরিবর্তনে অস্বস্তি বোধ করা স্বাভাবিক। অস্বস্তিকে কাটিয়ে মানিয়ে চলতে শিখুন । একটি সুস্থ সম্পর্ক সকল পরিবর্তনকে সহজ করতে সাহায্য করে ।

৪. নিজের যত্ন নিন। প্রতিদিন নির্দিষ্ট কিছু সময় নিজের জন্য ব্যয় করুন । আপনার মনকে প্রফুল্ল রাখে এবং প্রশান্তি এনে দেয় এমন কোন কাজ করুন । নিজের ছোট ছোট শখ পূরণ করুন ।

নির্ভরযোগ্য হোন। কাউকে যদি কোন কাজের কথা দিয়ে থাকেন তাহলে তা পূরণ করুন । কথা দিয়ে কথা ভঙ্গ করবেন না । আপনি যদি কোনও দায়িত্ব গ্রহণ করেন তবে তা সম্পূর্ণ করুন। কারো বিশ্বাস ভঙ্গ করবেন না। একটি স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক বিশ্বাসের উপর গড়ে ওঠে ।

৬. ন্যায্য লড়াই করুন। প্রতিটি সম্পর্কের মধ্যে কিছুটা দ্বন্দ্ব, ঝগড়া বিবাদ থাকে। কারো সাথে আপনি কোনও বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করছেন; কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে আপনি তাকে পছন্দ করেন না। পারস্পরিক সম্মান ও মর্যাদাবোধ বজায় রাখুন ।

  • কথা বলার আগে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করুন। আপনার আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করুন । ঠান্ডা মাথায় ভেবে চিন্তে কথা বলতে শিখুন যাতে কখনো এমন কিছু বলে না বসেন যার জন্য পরে আপনাকে আফসোস করতে হতে পারে । 

  • "আমি উক্তি" ব্যবহার করুন। তার ওপর দোষ বা কারো না দেখিয়ে আপনি কেমন বোধ করছেন তা শেয়ার করুন । যেমন “আপনি যখন আমাকে ফোন দেননি ;তখন আমার মনে হয়েছে আপনি আমার ব্যাপারে পরোয়া করেন না”। কিংবা “আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারে আপনার উদাসীনতায় আমি কষ্ট পাই “ । মোটকথা আপনার মনের সুখ-দুঃখের অভিব্যক্তি অপরজনকে পরিষ্কার ভাবে বুঝিয়ে বলুন ।

৭. নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে পরিষ্কার ভাবে কথা বলুন। কারো সমালোচনা না করে কিংবা কারও উপর দোষ না চাপিয়ে আপনার মনের কথাটি পরিষ্কারভাবে খুলে বলুন । সমস্যাটিকে আক্রমণ করুন, ব্যক্তিকে নয়।

  • বর্তমান সমস্যায় ফোকাস করুন। অতীতের কোনো বিষয়কে কথায় কথা টেনে আনবেন না । “আপনি সবসময়ই এমন করেন” কিংবা “আপনি কখনো এই কাজটি করেন নি” এ কথাগুলো বলা থেকে বিরত থাকুন । আপনার বিশ্বাস, ধ্যান-ধারণা, ব্যক্তিত্ব, চিন্তাভাবনা অন্যদের সাথে নাও মিলতে পারে । 
  • আপনার ভুলের জন্য দায় স্বীকার করুন। আপনি যদি কিছু ভুল করে থাকেন তবে ক্ষমা চেয়ে নিন।
  • বুঝতে শিখুন; কিছু সমস্যা সহজেই সমাধান করা যায় না। জীবনের সমস্ত সমস্যা বা অসুবিধার সমাধান করা সম্ভব নয় । কথোপকথনের মাধ্যমে হয়তো একে অপরকে বুঝতে পারবেন কিংবা কিছু ছোট ছোট সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে । তবে কিছু ব্যাপার থাকে যা অনেক গভীর হয় ; যা আপনি কখনোই পরিবর্তন করতে পারবেন না । তাই এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে সম্পর্ক তৈরীর আগে চিন্তা করে নিন কোন বিষয়গুলো আপনি মেনে নিতে পারবেন আর কোনগুলো পারবেন না ।

৮. ইতিবাচক হোন। রিলেশনশিপ গবেষক জন গটম্যানের মতে, সুখী দম্পতিদের পাঁচটি ইতিবাচক কথোপকথন বা অনুভূতি প্রতি একটি নেতিবাচক কথোপকথন বা অনুভূতির সমান । একে অপরের প্রতি আন্তরিকতা এবং অনুরাগ প্রকাশ করুন !

৯. আপনার জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখুন। একজন মানুষ হয়তো আমাদের সুখী হতে সাহায্য করে তবে তারা কখনোই আমাদের প্রতিটি প্রয়োজন মেটাতে পারে না। তাই, আপনার আগ্রহ রয়েছে এবং আপনার মনকে আনন্দ দেয় এমন কিছুর সন্ধান করুন। 

১০. নিজের মত থাকুন! অন্য কারো মত হতে চাওয়ার ভান করার চেয়ে ; আপনি যেমন আছেন তেমনটা থাকাই অনেক সহজ আর আনন্দদায়ক । 

প্রতিটি মানুষ স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের প্রত্যাশী । কোন সম্পর্ক একদিনে গড়ে ওঠে না; এর পেছনে যথেষ্ট ধৈর্য এবং সময় ব্যয় করতে হয় । আপনার সঙ্গীর সাথে প্রেম এবং স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক তৈরি করতে চান?আশাকরি স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের ১০টি টিপস আপনাদের কাজে আসবে ।


Related Posts

Comments