Featured Post

Asus Zenbook Duo In Bangladesh Market

ঘরোয়া পদ্ধতিতে ব্রণ দূর করার উপায়

 

ঘরোয়া পদ্ধতিতে ব্রণ দূর করার উপায়

ঘরোয়া পদ্ধতিতে ব্রণ দূর করার উপায়

যেকোনো ধরনের ত্বকের একটি অতি পরিচিত সমস্যা হলো ব্রণ। ব্রণের কারণে আমাদের ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। ত্বক লালচে হওয়া, কালো দাগ ইত্যাদি সমস্যাও দেখা দেয় এই ব্রণ থেকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ত্বকে স্থায়ী দাগও ফেলতে পারে। তবে ঘরোয়া কিছু উপকরণ দিয়েই এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। তাই চলুন জেনে নেয়া যাক ঘরোয়া পদ্ধতিতে ব্রণ দূর করার উপায়।

ব্রণ সাধারণত কম বেশি সব ধরনের ত্বকেই হয়ে থাকে। তবে তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের সংক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ব্রণ হয়। এছাড়াও মানসিক চাপ, দেরিতে ঘুমাতে যাওয়া, হরমোনাল সমস্যা, খাবারে অনিয়ম, রজচক্রে অনিয়ম ইত্যাদি আরো বিভিন্ন কারণে ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই ব্রণের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে আমরা বিভিন্ন কেমিক্যাল মিশ্রিত প্রসাধনীর সামগ্রী জিনিসের সাহায্য নিয়ে থাকি। কিন্তু এই ধরনের প্রসাধনী সামগ্রী দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে ত্বকের অনেক ক্ষতি সাধিত হয়ে যায়। এমনকি এই ধরনের প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহাওে অনেক সময় ত্বকের স্থায়ী ক্ষতি পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। তাই ঘরোয়া সামগ্রী দিয়েই এই ব্রণ সমস্যার সমাধান করাই উত্তম।

নাকের ব্রণ:

১. টুথপেস্ট:

অনেক সময় দেখা যায় ব্রণ মুখের অন্য কোথাও না হয়ে নাকের আশেপাশে বা নাকের মধ্যে ওঠে। সেক্ষেত্রে অনেক বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। আবার এ ধরনের ব্রণ সহজে সেরেও ওঠে না। তাই এর জন্য টুথপেস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। রাতে ঘুমোতে যাবার আগে ব্রণের জায়গা গুলোতে আলতো করে পেস্ট লাগিয়ে নিন। এরপর সকালে উঠে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। ব্রণ শুকিয়ে যাবে। পেস্ট এর এন্টিঅক্সিডেন্ট ব্রণকে তাড়াতাড়ি শুকাতে সাহায্য করবে।

২. রসুন: 

রসুনের কোয়া থেকে খোসা ছাড়িয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এরপর এর সঙ্গে ১ চা চামচ মধু ভালোমতো মিশিয়ে ব্রণের জায়গায় লাগাতে হবে। ২০ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। রসুন ত্বকের বিভিন্ন জীবাণুকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল রাখে।

৩. বেকিং সোডা:

পানি দিয়ে বেকিং সোডার একটি মিশ্রণ তৈরী করে নিন। এরপর এই মিশ্রণ ব্রণে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিটের মতো। ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন। বেকিং সোডার উপাদান ব্রণের জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে।

তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ:

তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের সমস্যা তুলনামূলক বেশি দেখা যায়। এ কারণে অনেক বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। তেলের কারণে ত্বকের লোমকূপের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে ত্বকে জীবাণুর আক্রমণ বেশি হয়ে থাকে এবং ব্রণের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এ কারণে ত্বককে সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। তাই তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের সমস্যা সমাধানের কিছু ঘরোয়া টিপস দেয়া হলো।

লেবু ও মধু


১. লেবু ও মধু:

ব্রণ সারাতে লেবু ও মধুর জুড়ি নেই। লেবুর এন্টিঅক্সিডেন্ট তৈলাক্ত ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণ করে ত্বককে ব্রণমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। ১ টেবিল চামচ লেবু এবং ১ টেবিল চামচ মধু নিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরী করতে হবে। মিশ্রণটি পুরো মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। 

২. বেসন:

পানি দিয়ে বেসনের একটি মিশ্রণ বানিয়ে নিতে হবে। পুরো মুখে এবং গলায় মেখে শুকানো অবধি অপেক্ষা করতে হবে। শুকিয়ে গেলে মুখ ও গলা ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে অন্তত ২-৩ দিন এভাবে ব্যবহার করতে হবে।

৩. মুলতানি মাটি:

মুলতানি মাটি ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূরীকরণে অত্যন্ত কার্যকরী। মুলতানি মাটি পানি দিয়ে পেস্ট করে মুখে ও গলায় মাখতে হবে। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে।

৪.তুলসি পাতা:

তুলসি পাতার আয়ুর্বেদীক গুণ ব্রণ দূরীকরণে অনেক কার্যকরী। তুলসি পাতা বেঁটে রস ছেঁকে নিতে হবে। এরপর ব্রণের জায়গায় লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

৫.অ্যালোভেরা:

অ্যালোভেরা ব্রণ সারাতে খুব উপকারী। ব্রণের ক্ষেত্রে অ্যালোভেরা এন্টিফাঙ্গাল হিসেবে কাজ করে। অ্যালোভেরা খোসা ছাড়িয়ে ভালোভাবে চটকিয়ে নিতে হবে। পুরো মুখে মেখে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে।

ছেলেদের ব্রণ:

মেয়েদের মতো ছেলেরাও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে থাকেন। ছেলেদের ত্বকে যে সকল সমস্যা দেখা দেয় ব্রণ তার মধ্যে খুবই কমন একটা সমস্যা। বিভিন্ন কারণে ছেলেদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

  • হরমোনের তারতম্য
  • খাবারে অনিয়ম
  • বদহজম
  • ত্বক পরিষ্কার না রাখা
  • ভিটামিনের অভাব
  • কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি

ব্রণ থেকে বাঁচতে নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিতে হবে। নিয়মিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক ফেসিয়াল প্যাক ব্যবহার করতে হবে। 

ময়দা ও কাঁচা দুধ:

ময়দা ও কাঁচা দুধ একসাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরী করতে হবে। মুখ ও গলায় ভালোভাবে ঘষে মাখতে হবে। শুকিয়ে গেলে ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই ফেস প্যাকটি ব্রণের ক্ষেত্রে অনেক উপকারী। এছাড়াও ত্বকের মরা চামড়া, কোষ সরিয়ে ফেলতেও সাহায্য করে।

টক দই ও শশার মিশ্রণ:

শশা ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এরপর শশা ও দইয়ের একটি পেস্ট তৈরী করে নিতে হবে। মুখে মেখে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।

নিমপাতা দিয়ে ব্রণ দূর:

ত্বকের যত্নে নিমপাতা অতুলনীয়। নিমপাতা একটি অত্যন্ত উপকারী ও কার্যকরী ভেষজ ওষধি উদ্ভিদ। ব্রণের ক্ষেত্রেও নিমপাতা একটি কার্যকরী উপাদান। ব্রণ দূর করতে নিমপাতার বিভিন্ন প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করা যায়। 

ছেলেদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা
Photo by Isabell Winter on Unsplash


নিমপাতা, হলুদ ও দুধ:

নিমপাতা, কাঁচা হলুদ ও দুধ একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে পেস্ট তৈরী করে নিতে হবে। ভালোভাবে পুরো মুখে মেখে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

নিমপাতা ও বেসন:

নিমপাতা ও বেসন পরিমাণমতো নিয়ে একসাথে বেঁটে নিতে হবে। পুরো মুখে মেখে শুকাতে হবে। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালোভাবে ঘষে ধুয়ে ফেলতে হবে।

নিমপাতা ও মুলতানি মাটি:

নিমপাতা বাটা ও মুলতানি মাটি একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে পেস্ট তৈরী করে নিতে হবে। ভালোভাবে পুরো মুখে মেখে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

নিমপাতা ও চন্দন গুড়া:

নিমপাতা বাটা ও চন্দন গুড়া একসাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরী করতে হবে। মুখ ও গলায় ভালোভাবে ঘষে মাখতে হবে। শুকিয়ে গেলে ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই ফেস প্যাকটি ব্রণের ক্ষেত্রে অনেক উপকারী। এছাড়াও ত্বকের মরা চামড়া, কোষ সরিয়ে ফেলতেও সাহায্য করে।

মুখের ছোট ছোট ব্রণ:

বয়সন্ধিকালে এই ধরনের ছোট ছোট ব্রণের সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। বিভিন্ন হরমোনাল তারতম্য এবং মানসিক চাপের কারণে এই ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। ছোট ছোট ফুসকুঁড়ির মতো দেখতে এই ব্রণগুলো মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে হয়ে থাকে। 

সাধারণত মুখের তৈলাক্ততার কারণে এই সমস্যা হয়ে থাকে। এ কারণে তৈলাক্তভাব কমাতে হবে। এর জন্য বিভিন্ন হার্বাল ফেসপ্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও সমস্যা বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তৈলাক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। বার বার মুখ ধুতে হবে। মুখের ত্বক সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ব্রণ কখনও হাত দিয়ে খুঁটা যাবে না। নতুবা এই সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। 

ব্রণের সমস্যা কমবেশি সবারই হয়ে থাকে। অনেক সময় ব্রণ থেকে ত্বকে বড় ধরনের সমস্যাও হতে পারে। এ কারণে ব্রণের সমস্যা দেখা দিলেই ত্বকের যত্নে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ব্রণ দূর করার উপায় সমূহ নিয়মিত মেনে চলতে হবে।




Related Posts

Comments